বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা
বিয়ানীবাজার পৌরসভার বর্তমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। আসন্ন রমজানের পূর্বে-পরে ১ম শ্রেণীর এ পৌরসভার ২য় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের চেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের হাকডাক একটু বেশী। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভোটার খেদোক্তি করে বলেন, প্রার্থীদের আচরণে মনে হচ্ছে আগামী সপ্তাহে বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচন। ভোট নিয়ে আমাদের আগ্রহের চেয়ে সম্ভাব্য মেয়র-কাউন্সিলার প্রার্থীদের তৎপরতা বেশী।
যে যাই বলুক-বিয়ানীবাজার পৌরসভার ২য় নির্বাচন আসন্ন। রাজনীতি সচেতন পৌরবাসী ইতোমধ্যে এখানকার মেয়র-কাউন্সিলার প্রার্থীদের নানামুখী তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রবাস থেকেও সমর্থন আদায় করছেন মেয়র প্রার্থীরা। কেউ আবার দেশে ফিরছেন-প্রার্থী হতে-প্রার্থী জেতাতে। এ পৌরসভার আয়তন ১৮ দশমিক ১৭ বর্গ কিলোমিটার।
২০০১ সালে বিয়ানীবাজার সদর ইউনিয়ন পৌরসভায় রুপান্তরিত হয়। দীর্ঘসময় এ পৌরসভার প্রশাসক ছিলেন তফজ্জুল হোসেন। পরবর্তীতে আন্দোলন-সংগ্রাম, মামলা-মোকদ্দমা, জটিলতা কাটিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর পর পৌরসভার ২৫ হাজার ২৪ জন ভোটার ১০টি কেন্দ্রে তাদের পবিত্র আমানত ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন। এবার ভোটার সংখ্যা আরো বাড়বে।
২০১৭ সালের ২৫শে এপ্রিল গত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে কসবা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত হলে পরবর্তীতে এ কেন্দ্রে পুণরায় ভোট গ্রহণ করা হয়। পৌরসভার ১ম নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আব্দুস শুকুর মেয়র নির্বাচিত হন।
এদিকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নানাকথা-গুজব আলোচিত হচ্ছে ভোটার ও সাধারণ জনমনে। কেউ এসবে পাত্তা দিচ্ছেন, কেউ আবার ওড়িয়ে দিচ্ছেন। ইদানীং নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। ব্যালটে না-কি ইভিএমে ভোট হবে-তাও জানতে আগ্রহী সচেতন ভোটাররা।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অনেকের নাম আলোচিত হচ্ছে। এদের মধ্যে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুস শুকুর, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুব-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ টিটু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক জিএস ফারুকুল হক, বিয়ানীবাজার পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও কানাডা প্রবাসী আহবাব হোসেন সাজু এবং ফ্রান্স আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী। এদের মধ্যে একাধিক প্রার্থী নৌকা প্রতীক না পেলেও বিদ্রোহী নির্বাচন করবেন এমনটা বলাবলি করছেন প্রার্থীসহ তাদের অনুসারীরা।
এছাড়াও কমিউনিষ্ট পার্টি থেকে এডভোকেট আবুল কাশেম, স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করবেন সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন, গত নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী আবু নাসের পিন্টু, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফতেহপুর গ্রামের অজি উদ্দিন
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও নবাং গ্রামের আব্দুস সবুর, যুক্তরাজ্য, সুপাতলা গ্রামের প্রভাষক আব্দুস সামাদ আজাদ প্রমুখ নানাভাবে প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন।
উল্লেখিত প্রার্থীরা এলাকায় গণসংযোগ, প্রচারণা, শীতবস্ত্র বিতরণ, ওয়াজ মাহফিল-ক্রীড়া-সংস্কৃতি প্রতিযোগীতায় উপস্থিতি-অনুদান প্রদানসহ নানা সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। এসব কর্মকান্ডে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে সংশ্লিষ্টদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আয়োজকরা। এতে বিয়ানীবাজার পৌর এলাকায় নির্বাচনের আগাম হাওয়া বইতে শুরু করেছে।
খাসাড়িপাড়া এলাকা থেকে সম্ভাব্য কাউন্সিলার প্রার্থী সাংবাদিক মুকিত মোহাম্মদ বলেন, মেয়র-কাউন্সিলার প্রার্থীদের প্রচারণা-হাকডাকে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই। আমি নিজেও প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা শুরু করেছি।
বিয়ানীবাজার শাখার সভাপতি এডভোকেট মো. আমান উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী বেশী থাকা গণতন্ত্রের জন্য ভালো। তবে নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে অনেকেই সরে দাঁড়াবেন। এখন নিজেদের পরিচিত বৃদ্ধি করতে নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এইচ,এম অভি